শাহজালাল বিমানবন্দরে তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ করতে যাচ্ছে সরকার

শাহজালাল বিমানবন্দরে তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ করতে যাচ্ছে সরকার

মতিহার বার্তা ডেস্ক : হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাত্রীর চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে নতুন করে তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ করতে যাচ্ছে সরকার। আর্থিক বিষয় চূড়ান্ত করে জুনের মধ্যেই টার্মিনালটির কাজ শুরু করতে যাচ্ছে সরকার। জুনে শুরু হওয়া এই কাজে শেষ হবে ২০২৩ সালে।

সিভিল এভিয়েশন সূত্রে জানা যায়, ২ লাখ ২৬ হাজার বর্গমিটার জমির ওপর নির্মিত হবে এই থার্ড টার্মিনাল। এ লক্ষ্যে গত বছরের ২০ সেপ্টেম্বর দরপত্র আহ্বান করে সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ। গত ১৯ মার্চ দরপত্র আহ্বানের সময়সীমা শেষ হয়েছে। এই প্রকল্প কাজে আগ্রহ দেখিয়ে যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত দুটি কোম্পানি দরপত্র জমা দিয়েছে। এর মধ্যে মিতসুবিশি, ফুজিতা ও স্যামসাং একসঙ্গে দরপত্র জমা দিয়েছে এবং সিমুজো, ইটালিয়ান থাই ও জেজিইসি একসঙ্গে দরপত্র জমা দিয়েছে। দরপত্র জমা দেওয়া এই দুটি কোম্পানিই কারিগরি মূল্যায়নে উত্তীর্ণ হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম নাইম হাসান বলেন, জাইকার অর্থায়নে প্রকল্প নির্মাণ হওয়ায় আমাদের পাশাপাশি তারাও কারিগরি মূল্যায়ন যাচাই-বাছাই করবে। তাদের কাছে প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। এগুলোর ফলাফল জানতে তিন সপ্তাহ সময় লাগবে। এরপর আমরা আর্থিক মূল্যায়ন সম্পন্ন করব। সার্বিক কাজ শেষ করে জুনের মধ্যে কাজ শুরুর নির্দেশনা প্রদান করা হবে। প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, থার্ড টার্মিনালের রানওয়ে হিসেবে ব্যবহার করা হবে মূল টার্মিনালের বর্তমান রানওয়ে; যা পরে সম্প্রসারণ করার প্রস্তাব রয়েছে। থার্ড টার্মিনালের নকশায় রাখা হয়েছে ২৪টি বোর্ডিং ব্রিজ। এর মধ্যে ১২টি প্রথম ধাপে নির্মাণ সম্পন্ন করা হবে। বাকিগুলো পরে প্রয়োজন অনুযায়ী নির্মাণ করা হবে। বোর্ডিং ব্রিজের সঙ্গে থাকবে ১৩টি চেক ইন বেল্ট। পর্যাপ্ত সংখ্যক এক্সেলেটর, সাবস্টেশন ও লিফট সংযুক্ত রাখা হবে। থাকবে রাডার, কন্ট্রোল টাওয়ার, অপারেশন ভবন, বহুতল কারপার্ক। তিন তলাবিশিষ্ট এ টার্মিনাল ভবনটির স্থাপত্যরীতিতে আনা হয়েছে অনন্য নান্দনিকতা। টার্মিনাল ভবনের বহির্বিভাগে থাকবে চোখ ধাঁধানো নকশা। মন্ত্রণালয় ও সিভিল এভিয়েশন সূত্রে জানা গেছে, শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সক্ষমতা বাড়াতে তৃতীয় টার্মিনাল ভবনসহ প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্পে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয় ১৩ হাজার ৬১০ কোটি ৪৬ লাখ ৮৫ হাজার টাকা। এ প্রকল্পে অর্থায়ন করছে জাইকা। এ টার্মিনাল ভবন তৈরি করতে গিয়ে নতুন করে নির্মাণ করতে হবে কার্গো ভিলেজ। এর আয়তন হবে ৪১ হাজার ২০০ বর্গমিটার। পার্কিং অ্যাপ্রোন রাখা হয়েছে ৪ লাখ ৯৮ হাজার ৫০০ বর্গমিটার। এ ছাড়া র‌্যাপিড এক্সিট অ্যান্ড কানেকটিং ট্যাক্সিওয়ে ও টার্মিনাল ভবনের সঙ্গে বিমানবন্দর মূল সড়কের সংযোগ তৈরি করা হবে। ওয়ানওয়ে ট্রাফিক সিস্টেমে হোটেল লা মেরিডিয়নের পাশ দিয়ে গাড়ি নিয়ে প্রবেশ করে থার্ড টার্মিনালে যাত্রী নামিয়ে বলাকা ভবনের পাশ দিয়ে বের হয়ে যেতে হবে। শুধু তাই নয়, নতুন টার্মিনাল থেকে বর্তমান ভিভিআইপি গেটের বিপরীতে নির্মাণাধীন ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের সঙ্গে যুক্ত হবে একটি সাবওয়ে (আন্ডারপাস)। এ সাবওয়ের মাধ্যমে তৃতীয় টার্মিনাল থেকে যাত্রীরা গাড়ি নিয়ে সরাসরি চলে যেতে পারবেন এক্সপ্রেসওয়েতে। এর ফলে টার্মিনালে প্রবেশ করতে কিংবা বের হতে যানজটের মুখোমুখি হতে হবে না যাত্রীদের। এই অত্যাধুনিক টার্মিনালের সেবা পেতে যাত্রীদের অপেক্ষা করতে হবে আরও চার বছর

মতিহার বার্তা ডট কম – ০৬ মে, ২০১৯

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply